বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

অনুসূয়া ও স্তন্যপায়ীর গল্প



ঠান্ডা ভাতের হাঁড়ির ভেতর আম্মুর গায়ের গন্ধ লেগে
দক্ষিণ দিকের ডোবার ধার থেকে উঠে এসে এক শিশু উত্তরের আলপথ ধরে চলবে ,
কোমরের ঘন্টা ঝুনঝুন করে বাজে ; চৈতালি ভেজা ধানক্ষেতে সে হেঁটে যাবে , বেমালুম
অভিমান করে মাঠ পার হবে
টোরি বস্তিতে গম কাটা সারা হলে সমস্ত যাযাবরের মতন ভীষণ অযত্নে , স্নেহহীনতায়
ছৈয়ের মরশুমি ঘর ছেড়ে যাবে তারা সেই খরিফের শেষে ;
শুখাইয়ের দিন করুন বাতাস বিকেলে কুলোয় পাতান ঝাড়ে একটা ছায়া
দূরে বনঝোপে কেউ সদ্য আগুন দিয়েছে

ন্যাড়া মাঠের ওপর এক অনুসূয়া পরকীয়া সহবাসে শীৎকার করে ;
সবুজ প্রজাপতি সীমবনে বেগুনি ফুলঝোপ থেকে আরেক অনুসূয়া এসে কাজলের টিপ্ পরিয়ে দিয়ে যায় ।
রঙিন মাছের দহ পার হলে পর
তার বুকের গন্ধে ভরা দুন্দুলের পাতায় চিঠি লিখে দেয় -
জীবন্ত শব্দেরা শিমুলতুলোর মতন ওড়ে তখন ,
ধীরে
আমাদের থুতনির তলায় যতখানি কামনা লুকিয়ে থাকে ঠিক ততখানি ওম নিয়ে ওড়ে।

ঝিঁ-ঝিঁ ডাকে ,
জাতার কলে ডাল পেষাইয়ের শব্দ ঘামের মত চুঁইয়ে পড়ছে নিচের দিকের উপত্যকায়
নেশাতুর বনকুসুমের ঘ্রাণে ঘাইহরিণীর মতো ডেকে চলে
নিষিদ্ধ পর্বতের অবনত হয়ে যাওয়া শীতকালীন খাতে  ।


বনদেশে সান্ধ্য শুঁটির গন্ধের মতো ভাপ ওঠা শুরু হওয়ার অনেক আগে
প্রসবপর্ব শেষ হয় 
সদ্যজাত শিশুরা কাঁদে , 
আগুনে ঝুমের মত গভীর শোকে কাঁদে , যোনির ভেতর থেকে বেড়িয়ে হামাগুড়ি দেয় রতিক্রিয়ার ঘামে ভিজে, হামাগুড়ি দেয় অনুসূয়ার পেটে, বুকের ওপর ;
থুতনি আর ঠোঁটের ভেতর উৎসারিত শূন্যতায় মানুষের মতন গভীর ভালোবাসে
শীৎকার শোনে স্তন্যপায়ীর প্রবণতায় ।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন