বৃহস্পতিবার, ২৮ মে, ২০১৫

ভাঙ্গা গেরস্থালীর শতক আর চৈতালী সোনা

    
       বাঁশলাবাড়ির ওইপার দিয়া সৈন্ধ্যার সময় গাই-ছাগল গোয়ালঘর ফিরিবা শুরু করে। ফাগুন মাস আইসে আইসে। আমের গাছত্ মেলা বোল ধরিসে।  ননিবুড়ি কয় যেই মাঘে যত বোল আমের , নয়া বচ্ছর তত ঝড় ঝাপট। আলুর ক্ষ্যাত্ - বিঘাকে বিঘা আলু গোটো ধীপের ছড়াছড়ি দহলাত্ । হাটত নাই দাম ; দুই টাকায় দুই ব্যাগ আলু পাওয়া যায় সাত্কুড়া - হেমকুমারির বাজার থাকি। শ্যাষ ফাগুনের শুকান বাও নাগি পুরাট সির্শ্যার গাছ ডলমলায়।  হরেনের টেম্পো চলেনা মেলা দিন গেইল। বন্ধনের লোন নিয়া অঘন মাসে আলু কিনিবা ইন্তেজাম হইল ; তা মরশুমত্ না হইল ধোসা রোগ , না পাতাপচা ; সগারে আলুর ফল ভাল - ডাগর সাইজের গাছ। তেমন দামও গেইল নামি। দহলায় দহলায় আলুর পাহাড় গোটো হয়া থাকে। বাইশ্যা আসিলে পচি নষ্ট হবে চাষার সাধের আবাদ। তোর্ষা হিমঘর  থাকি মহাকাল হিমঘর - জলপাইগুড়ির তামাল্লায় ভর্তি ; কার বাপের দম এইসনে পচন আটকায় ! গেরস্থালী আলুর ঘ্যাট - আলুর ডাইল - আলুর ভাজা - পোড়া  খাইতে খাইতে মুখ আমতা করি ফেলাইসে। লোহা সাধুর আমের  গুটি ঝরা শুরু হলে উত্তর সামিলা-বসত ধরি রাইতের ক্ষণে সোনামুগের খোল পুরাট হয়া ফাটিবা শুরু  করে।  চাষার ঘরত্ রাইত পহরে জাতার কলের শব্দ ঘর - ঘরর - ঘরর - নম্ফো টিউ টিউ করি জ্বলে। 
    ভাটি-পহরত ওদ নামি আসে।  বাঁশলাবাড়ি - ক্ষেত্ ঠন্-ঠোনা নাগি ; গোটা পাড়া কেমন জানি নিঝুম হয়া  থাকে। রঙিলা মাছির ভনভনানি - পচা আলুর গন্ধ ভরা বাও গুয়ার গাছ টনটন করি শিরা দোলায় পশ্চিমা ঘুর্নির তানত্।  কাঁচা সড়ক ধরি হান্ডিওয়ালা যায় ; সাইকেলের ক্যারিয়ার ঠাসি আলুমিনিউমের থালি - হাঁড়ি -কানটাই নাইলনের দড়ি বান্ধা। অফলা মন্দার দিন এই হান্ডিওয়ালা কনেক অধেক্ হাসি আনে গেরস্থালির বেতিছাওয়া-গিলানের মুখত্। পুরাণ   থালি - বাটি কাঁসার যা আছে দেও আর নয়া স্টিল আলুমিনিউমের জিনিস নেও বদঅলে। কয় বছর ধরি নাই ঠিক বাজারের। ফল বেশি ত দাম নাই আর খরা -ধসায় মইল ত ফাক্কা সগায়। পাড়ার বড় বড় ঝাকুআ ঘর ভাঙ্গি আইল্দা আইল্দা হাঁড়ি হছে হরদম। উমাচরণ নীলফামারী থাকি ঘর আনি যে সাধের সংসার গরিছিল মেলা কুড়ি বচ্ছর হইল , রেডীয়ত তার সাধের 'জয়বাংলা' শুইনতে শুইনতে কদ্দিন যে দুম করি ঘর ভাঙ্গি হাঁড়ি আলদা হইল কাওঈ ট্যার পায়নাই নাহয়তে ট্যার পায়েও চুপ মারি আছিলো। ডোবা আলদা , ক্ষ্যাতের ভূঁঈ , কায়ন্চ্যার হাঁসের খুপরি - থালি গিলাস মায় ত্যাজপাতা গাছটাও ভাগ। তেমনি হইসে হান্ডিওয়ালার রমরমা।  যত নয়া ভাগ , তত হাঁড়ি কান্তাই বেচাবিক্কিরি। পচা আলুর গন্ধ আর পিটিফাটা ওদের ভাটিপহর ধরি ওই একটা লোক গোটা পাড়া মাত করি দেয়। মহল্লায় মহল্লায় কারো কামের খোঁজ নাই। দলে দলে জোয়ান কামাইল চড়া সুদের টাকা ধার নেয় মারওয়ারির দোকান থাকি ; টিকিটের খরচ যোগার করে আর কেরালা - বোম্বাই - দিলহি  পালায় মাইয়া -ছাওয়া  ছাড়ি , বাপ-মাও ছাড়ি 
কামাইড় তানে। কাও বন্ধন থাকি লোন নিতে নিতে একদিন ফাক্কাও করি হাওয়া হয়আ যায়। তারপর কোতয়ালির পুলিশ আসি একদিন - দুইদিন খোঁজ নাগায় - তিনদিনের দিন গরু-ছাগল - ঘরের চাটি মায় টিনের চাল খুলি নিগায়।  গোটা পারাখানত অভাব নুকা - টু খেলায় ; সপ্তা শ্যাষে  রেশনের ত্যাল - চিনি - ক্ষুদীঅলা চাইল দিয়া চলে কুনঅ-মতে ছাওয়ালগিলা মিডডে মিলের তানে ইস্কুল যায় আর চুরি বাড়ে। হান্ডিওয়ালা  সকাল থাকি সৈন্ধ্যা অব্দি পসার নিয়া নন্দনপুর - কাশিয়াবারী - চামরাগুদাম চক্কর মারে। যার ভাতার বিদেশ খাটিবার টানে ঘরত নাই - শুনশান বাড়ি - হান্ডিওয়ালার রমরমা - ভরা গতরের মাইআ দুয়ার আওজে চুপ মারি অয় - হান্ডিওয়ালা বদলে নয়া স্টিলের বালতি দেয়  - মেলার সময় টিপ পাউডার - লাক্স সাবণ আনি দেয়। গিরামের পর গিরাম এইমতন অভাবের দিন মাইয়ার গতরের অভাব কদ্দিন আরো হইসে ! চোরচারী নিখাইয়ের দিন কায় কার খোঁজ থোয় !
      বানদের পাড় দিয়া জেইঠে নলবনের ঝাড় আর সোতার জলত বৈরালী খলখলায় ; বক্সীগঞ্জের  ধ্যাপের খোলান হইয়া অঘন মাসের  হিম নাইমলে গাইছাগলের পাল ঘর যাবার যোগার করে। দহ ধরি কুন দ্যাশের পাখি দলমলানি হেলেঞ্চা গাছত ঘর বান্ধে আর তর্সার নাও বালি বয় । দুম করি কত মানষী বড় হয় ; এক বালির ঢিবি ভাঙ্গি আরেক শন মাসের বাইশ্যা আসে ; পিঠাখাওয়া সংক্রান্তি পায়রাইলে যাত্রার দল দহলাত মঞ্চ করে , ফুরাইলে চলি যায়  আর বচ্ছরের পর বচ্ছর একখান গান ঘোরে নয়া সিদৌলের সুবাসের মতন  এইমতন  না-পাওয়া - অভাব - ভাঙ্গি চুরচুর হওয়া গেরস্থালি - বেবাগী ঘরের মাইয়া ছাওয়াল ; যেই ব্যাটা নয়া কইন্যা ছাড়ি কেরালাত গতর খাটে  সেই মানসি গিলার ছোট ছোট গল্প গিলা  গান বনে , খন্দকারপাড়া - ইসমাইলের ঘাট - নন্দন্পুরের কালিমন্দির ছাড়ি কায় জানে কোটে মিলি যায়  আর চৈত্ কালপুরুষ উঠিলে দহলায় দহলায় সোনামুগ ডাইল  খোলা ফাটায়। একখান গাও - একখান মহল্লা জুরি জমিনের পর জমিন এই মানসিগিলার কত আটির নিন্দের গান - ভরাট বেটিছাওয়ার ডাগর চোখের মায়া নিয়া খোলা ফাটে -  আরবচ্ছর গেরস্থালি ভরপুর হবে !  
       














মঙ্গলবার, ১৯ মে, ২০১৫

১৯শে , তোমাকে

সেদিনও নিথর রাত্রি শেষে
ঘরে ঘরে 
সমস্ত নিস্প্রভঃ কাছাড়ে 
হাঁড়ি ওঠে নাই 
শিশু কাঁদে নাই আর ;
শিলচর দহ-পাড় শুনশান 
পশ্চিমা বারিষণ মেঘের মতন , ধীরে ,
মুঠোবাঁধা হাত 
তটস্থ চোয়াল দৃঢ় তবু ;
মহল্লার প্রশান্ত জনতা স্থিরচক্ষে 
রাজপথে উদবেলিত হল - 
বরাকের গাঢ়তম মাদারের রঙ !
বঙ্গদেশে আরেকটা শিশু জন্মালে যারা বিস্মৃত থেকে যাবে ,
দীনতার দিন কবিতা অদ্য উনিশের হউক ।

সোমবার, ১৮ মে, ২০১৫

এপ্রিলের ডায়েরি


১.
সব ছোটগল্পের শেষের মত আর ক'মাসে কলকাতার আরেকটা ব্যাচ কলেজ ছাড়বে। যে ছেলেটার সাথে ছোঁয়াছুয়ি খেলতাম , যার সাথে স্কুল পালিয়ে প্রথম তিস্তায় স্নান করতে গেছি - যার জন্যে বানানো কার্ড ব্যাগে , স্কুল শেষের দিনগুলোয় তাদের কেউ যেন চেনা নয়  আমার ! গোলস্কুল ;  পুরোনো স্টেশনপাড়ায় ঘোরা মরশুমে যেন অন্য একরামুল - অন্য তুষার - অন্য আফরীন ছিল ওরা। কলেজের গত কয়েকটা বছর তোতলানো সাম্বা - চঞ্চল তিরুমল - সিরিয়াস অশ্বিনী - স্বপ্নের রঙের মতন এক এনসাইক্লপিডিয়া গল্পভর্তি ভূপেন কিস্কু - নবারুণ খোর খৈয়াম এরাও আমার অচেনা ; ঠিক যেন একশতাব্দী আগের পরিচয়। যে সাত্যকি এসে ইছামতীর জলের গল্প বলেছে নিউগড়িয়া রেলকলোনি চপের দোকানে বসে , তাকেও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।  আর যারা বলেছিল সাদার্ন এভিন্যু জোড়ারাস্তার মোড়ে প্রথম কৃষ্ণচূড়া তোমার-আমার ; যাদের সুগন্ধি রুমালে ঘাম মোছা যায় অনায়াসে - একটা , দুটো করে অনেক সিগন্যাল পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ময়দান - রেডরোড - ইস্টবেঙ্গল মার্কেট ছাড়িয়ে হাওড়ায় লোকাল ধরা সহজ যাদের সাথে তাদের মুখ ভুলিনি , শুধু মানুষগুলো বড় অচেনা। রোদ্দুরে দুবরাজপুর বড়সড়কে দূরে পিচরাস্তায় মরীচিকা দেখা যায় ; শীরিষের গাছ পাতা খসায় পুরোনো ; ঘুড়ি ওড়ানোর দিনে সেই এপ্রিলের দুপুরে এখন বড় গরম লাগে - হাঁসফাঁস করে উঠি ; নিজেকেও চিনিনা আর। 

২.
অনেক রাত্রিজাগা অবকাশ নিয়ে শিয়রে কথারা ভীড় বাড়ায়।  কাকে লিখব , কি লিখব ভেবে ভেবে দিনরাত্রি - গ্রীষ্মদুপুর ঘোরের মত মনে হয়। চিঠিপত্র বিনিময়ের আশ্বাসহীন পৃথিবীতে আরেকটা কাল্পনিক ছবি নিয়ে আঁকিবুঁকি  করা যেতে পারে বড়জোড় কিন্তু ছবি-সব  ভীষণ বোবা ; মুখ ফুঁটে কিচ্ছুটি বলেনা , অভিমান করে যুগের পর যুগ  ধরে। বব্ বলেছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হল সবে ; আমার ভয় করে সহস্র শূন্য ডাকবাক্স দেখে - ভীড় ভেঙ্গে কোনো চেনা মুখের গড়ন দেখে ; আমার ভয় করে হঠাত্ নাম ধরে কেউ ডাকলে। 

৩.
খলখলিয়ে হাসে। ডুয়ার্সের মাদার ফুলের রং গাঢ় হলে যাকে সহজে খুঁজে পাওয়া যায় ; উন্মত্ত এপ্রিল-দুপুরের রোদে যার জন্যে তেপান্তরের মাঠ হেঁটে - জামার হাতায় কপাল মুছে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা যায়, তার সাথে আবার দেখা হবে বেলঘরিয়ার লোকাল ট্রেনে। সত্যজেঠু মদ খেয়ে যার কথা বলে প্রশান্ত হাসি দেয় - দেশভাগের গল্পের আগে নীলফামারী-মেক্ষর্টাড়ি রাস্তার বাঁকে সন্ধ্যেবেলা যাকে হারিয়েছিল , আরবছর সে ফোন করে জানতে চাইবে সত্যজেঠুর ক'টা দাঁত পড়ল - টাঁক কতবড় হল ! বালুরঘাট লাস্ট প্যাসেঞ্জারে ওঠা কিছু হিজড়ের দল কোনো  কিশোরের থুতনি চেপে আবার বলবে ওমা কি আদরমুখো ছেলে ! তারপর মাতুঙ্গার ভীড়হীন বাসে হিন্দুস্থানী কনডাক্টর মাথায় হাত বুলিয়ে ভাড়া চাইবে উদাস কোনো গৃহকাতর যুবকের। যে যেখানে যেরম ছিল গোটা হেমকুমারী গ্রামে তাদের সক্কলের তিষিক্ষেতে রবিচাষের মরশুমে ভরা ফলন হবে।  আশমা পারভীন ; আশমা পারভীনের লেখা একুশ শতকের চিঠি খুলে যেদিন তার হাতের গন্ধের মত অক্ষর পড়ব সেদিন আর কল্পনার রং নয় , রিজেন্ট এস্টেটের রাস্তা কলকাতার বৃষ্টির দিনের মত সুন্দর ; গোলপার্কের ভীড়ে তাকে খুঁজে পাওয়া যাবে হামেশাই। অমলকাকুর বাবা হারিয়ে গেছে ; মাঝরাতে ঘুমন্ত শিশু , স্ত্রী'কে রেখে বাড়ি ছেড়েছিল ; অমলকাকু তার খোঁজ জানবে একদিন। গত এগারো বছর একটাও কথা না-বলা বোবাসাধু তার সাধন ভেঙ্গে স্ত্রীকে নিয়ে ঘরঘড়িয়া হাটে যাবে মাছ বেচতে - গুড়ের জিলিপি শালপাতার ঠোঙ্গায় মুড়ে মথুরাবাগান টি-এস্টেটে জ্যোত্স্নার আলোছায়ায় পথ ভাঙ্গবে ; গল্প করবে ; চুমু খাবে । সারি সারি অটোর লাইন ধরে ক্লাস শেষে ছেলেটা আবার এসে দাঁড়াবে ; বাটার স্কচ্ ডাবল স্কূপ নেবে ; শতাব্দীর মত ধীরে চলা মিনিটগুলো ফুরিয়ে মুখে ব্রণ'র দাগ ভর্তি কালো মেয়েটা সেদিন সত্যি আসবে।  গোগোইয়ের কথা - থাঙ্গুলাল থংসাই গোগোই - মনিপুরের উপত্যকায় যে শীষ দিতে দিতে  মোষ চড়াত  , আর এইখানে হেদুয়ার ধারে গল্পের মত বিকেলে গীটার বাজিয়ে ছেলেটা গিরিশ পার্কের পুরাতন গলির দুপুরের সাথে  হারিয়ে গেছে। সেদিন স্কটিশ গেলে গোলার দোকানের সামনে সে ঠিক অপেক্ষা করবে নিশ্চয় ! পকেটে টান থাকলে ছোট নেভিকাট কিনবে দুটো। 

রবিবার, ১৭ মে, ২০১৫

আশমা পারভীনের চিঠি


এইখানে হলুদরঙ্গা মেঘের মাঠে ময় ,
বিটলফুলের ঘ্রাণে সারাগ্রাম ভরে গেলে 
সন্ধ্যেবেলার উজান নদী নয় ,
পৃথিবীর দুমকা ফুলের মরশুমে 
হাত ধরা যায় যখন - কথাভাষাহীন 
অস্ফুট শিশুর হাঁটতে শেখার মত
সত্যিকারের মনে রাখা যাবে !
গৃহস্থ্য ঘুমিয়ে গেলে বেড়াল ডাকে  ভাতঘুমের দেশে মধ্যাহ্নে ;
আলোচালের  গুড়ো মাখা হাতে যদি ভাবো স্মৃতি আছে  
তবে শালকুসুম নই , 
নই স্তরিত বসন্তের আমলকিবন ;
সন্ধ্যাতারার কোনো নিশ্চুপ অন্ধকারে 
আমার চুলের মতন রেশমি সুবাস সত্যি নামেনি।
সদ্যজাগা , ঘুমভাঙ্গা একবিছানায় যেমন চেয়েছি তোমায় 
বয়স্ক  বেগুনীর ঘ্রাণ - ছাদে শুকোনো আচারের ডিবে ছাপিয়ে 
তবুও যদি চাক্ষুষ কিছু স্পর্শকাতরতা 
অতর্কিতে গুনগুন করা গান হয়ে থাকে , 
জেনো প্রাপ্তি কিছুটা তবু ;
চৌকাঠ পেরিয়ে নির্বাসনের দিন 
ভেবেছি এইবারে ভীড় ভেঙ্গে কেউ এসে বলবে  কেমন আছি 
নিকোনো উঠোন পার হয়ে আদর বন - দোর্গাবল্লীর ক্ষেত 
আশমান ফুরিয়ে আরো দূরে হারিয়ে গেলে 
কারো চিন্তা হবে দিনান্তে ;
যেখানে নীল জলে হাঁটু ডুবিয়ে থাকা যায়  অফুরাণ-
সাঁঝের বেলা কেউ পাশে বসে জানতে চাইবে 
আর কতদিন এইমত 
শুকতারা দেখে দেখে চোখে কালি ফেলা ! 

আরেকটা বদলের গল্প 
ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাওয়া দেশ - কাল 
তোমার আমার মাঝের ক্রমঃবর্ধমান দূর্ভেদ্যতা তোমারই থাক ;
কয়েক দশক চরে বেড়াব নিরুদ্দেশ 
তারপর দোরে এসে একদিন বলে দেব ওইখানে তোমার ঘাড়ের তলার আঁচিল আমার ,
বাড়ন্ত যুবকের শক্ত হাতে নিখোঁজ শিশুর আলুথালু আঙ্গুল লুকোনো বহুকাল 
সেসব ছুঁয়ে দেখব আরেকবার ।