১.
চর নন্দনপুর - মান্দালঘাট - বোয়ালমারী জুড়ে
সেবার দেশভাগের ঢেউ !
সেবার দেশভাগের ঢেউ !
তিস্তার ধার বেয়ে লোকে আবার ঘর বানিয়েছে
বানিয়েছে চাষের ক্ষেত
ফেলে আসা দেশের স্মৃতি নিয়ে -
আর হোগলার বন কেটে কেটে -
আরেকটা সিঁদুরে আমের বাগান -
আরেকটা ঘাট বাধানো পুকুর - তালসারী - বাঁশবন
গৃহস্থের নতুন স্বপ্নের ঘোরে
আরেকটা রাজশাহী -
আরেকটা খুলনা -
আরেকটা ডোমার -
আরেকটা মৈমনসিন্ঘা পাওয়ার অবচেতনতা তবুও মিলিয়ে গ্যাছে উত্তর তিস্তা আকাশের ধ্রুবতারায় !!
২.
পূব ঘরের পাশে গোলা ঘর ছিলো - ভর্তি ধান - চৈত্রের রসুন -
আর একেক আট -দশ কিলো কুমড়ো এ ভরা বছরভর ;
আর একেক আট -দশ কিলো কুমড়ো এ ভরা বছরভর ;
দক্ষিনের আদার বন আর হলুদের ফুল কবেকার এক শান্ত দুপুর -
পাঁক -শালে ধোঁয়া -
পাশের কাটাল গাছ -
একটা বেড়ালের ডাক -
উঠোনে শুকোতে দেয়া ধানে পায়রার ঝাঁকের মতই
পালিয়ে যাওয়ার গল্প এগুলো !
গোয়ালের গরুর পাল আর দুটো মোষ নিয়ে যে ছেলেটা শীষ দিতে দিতে চরাতে যায় মাঠ তিস্তার কাশবন -
আকাশ নেমে আসা মেখলিগঞ্জের দিকে -
শুনেছি সে কেরলায় আছে , ইটভাটা খাটে ;
শুনেছি সে কেরলায় আছে , ইটভাটা খাটে ;
যেবার প্রথম পাম্প -সেট এলো কিংবা পাওয়ার -টিলার - বাড়িতে - সে সব কটা দিন স্পষ্ট ,
ওই বাঁশবনের ভেতরে যে রাস্তা চলে গ্যাছে বক্সীগঞ্জ , ফাল্ল্গূন-এর উদাম দক্ষিনার মধ্যান্যে
যে ভাঙ্গা-লোহা কৌটোর ব্যাপারী-টা আসে , সে কিনেছে সেই সব লোহালক্কর কেজি দর-এ !
যে ভাঙ্গা-লোহা কৌটোর ব্যাপারী-টা আসে , সে কিনেছে সেই সব লোহালক্কর কেজি দর-এ !
আর কলার বাগান - সুপুরি বাগান - পুকুর - তেজপাতা গাছ -
নলপুকুরের মাঠ - সবকটা আম - ঠাকুরদা যে লিচু কলম বুনেছিল সেইগুলো -
নলপুকুরের মাঠ - সবকটা আম - ঠাকুরদা যে লিচু কলম বুনেছিল সেইগুলো -
গরুর পাল - এমনকি থালা-বাসন -রান্নাঘর -
যে পীড়ি-তে বসে বাড়ির 'কামাল ' থেকে প্রত্যেকে খেতো -
সেই সবকিছু ভাগ-বাটোআরা হয়ে গ্যালো !
যে পীড়ি-তে বসে বাড়ির 'কামাল ' থেকে প্রত্যেকে খেতো -
সেই সবকিছু ভাগ-বাটোআরা হয়ে গ্যালো !
মোষের দায় কেউ নেবেনা তাই বেচে দিয়েছিল মোহিত্নগরের হাটে -
টটে বুড়ো জানে তার হাতে বড় হওয়া মোষ কেঁদেছিল বড়।
আর সে রাতে নন্দনপুর - মান্দালঘাট-এ পাট-ক্ষেতের আল জুড়ে -
প্রত্যেক দুর্বা ঘাসে ঘাসে সেই ক্রন্দন শিশির হয়ে ঝরেছিল এই বিচ্ছেদের-শতাব্দীর জন্মলগ্নে ।
প্রত্যেক দুর্বা ঘাসে ঘাসে সেই ক্রন্দন শিশির হয়ে ঝরেছিল এই বিচ্ছেদের-শতাব্দীর জন্মলগ্নে ।
৩.
দেশ ভাঙ্গে -
ভাঙ্গে নদী -
তারপর এই প্রেমহীন শতক
পৃথিবীর সবকটা একান্নবর্তী -পরিবার ভেঙ্গে উদ্দামতায় নাচে !
জয়ী , তোমার মনে ক্রন্দন নেই - নেই এপ্রিলের কাঞ্চন ঝরে গ্যালে বেদনা ;
মিছে ভাবি ,
"সকলের তরে সকলে আমরা ......" -
দূর !!! শিশুপাঠ কেউ পরেনাকো আজ ।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন