রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৪

পাতা খসানোর দিনরাত্রি


দুন্দুলের পাতার ভিতর যত ইতিহাস লেখা যায়
তার চেয়েও ঢের বছরের কথা ঝরে পরে আছে 
আকন্দের ঝোপে - শিরিষতলা - কাঠগোলাপের বাকলে ;
সারাটা পৌষালী  দুপুর উঠোনে পায়রার দল 
ধান খোটে - পাঁকশালে শিলনোড়ার শব্দময় 
আম্মুর হাতের তালুতে মশলার গন্ধভরা 
উত্তুরে হওয়া কবেকার জাতাকলে 
সোনামুগডাল ভাঙ্গে - অণুগল্প শোনায় ;
আরেকটা দশক -তারপর আরো বছর কুড়ি 
গৃহস্থের স্বচ্ছলতা বয়ে ঠাম্মার যৌতুকের মাকড়ি - পেতলের বাটি - পানের বড়জ 
সব্জিক্ষেত ভাগ হয়ে গেল 
তিনপ্রানির ফ্ল্যাটতলায় নতুন গাড়ি এলে যে মেজাজে ফুরফুরে হাওয়া বয় 
সেই একই অভিপ্রায় - সারাগ্রাম শাপলার ফুল - তেজপাতা - ধানিলংকার চাষ করে 
বড় হয়ে টাকা ফলাবে - টইটুম্বুর সংসার যারতার !
বাড়ন্ত একান্নবর্তী - কবেকার পুরাতন ; ভেঙ্গে গেছে। 
নিজের নিজের আখের গোছাতে - দুচোখে দোতলা বাড়ির স্বপ্ন 
জৈষ্ঠ মাসের বষ্টুমি আর কক্ষনো গান গাইতে আসেনি 
ভিড়ার ধোঁয়া দিগন্ত ছুঁয়ে এলে শুকতারার আলো ম্লান - আরও ম্লানতর 
বহুজাতিক ধান্দাবাজের কানে রাতপাখি থেকে গেছে শুধুই রাতজাগা পাখি হয়ে

তোমারও মনের মত কোনো একাকিত্বে 
ধনতান্ত্রিক আদরেরা 
বারবার বহুজাতিক জয়েন্ট ভেঞ্চার প্রেম হয়েছে কি জানা নেই !

ভালো থাক খাপু পাখির গান 
আবার কোনো বিকেলে নগ্ন পায়ে 
পশ্চিমের মোথা ঘাসের মাঠে তুমি দাঁড়ালে 
আমি শিশ্নের অভিশাপ ছাড়াই খুশি হব জেনো 
"একদিন যে দোতলা বাড়ির স্বপ্ন দেখেছি , সেই বাড়িটাকেই বোমা মেরে উড়িয়ে দিতে চাই। "  

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন